পরিপাটি পা পেতে

পরিপাটি পা পেতে

রূপচর্চায় মুখমণ্ডলের যত্ন নিতে অনেকের মনযোগ দেখা গেলেও পায়ের ব্যাপারে তারা উদাসীন। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ এই অঙ্গের বিশেষ যত্ন নেয়াও যে দরকার, এমনটিই মনে করেন বিশেষজ্ঞগণ। সৌন্দর্য রক্ষা, সংক্রমনের ঝুঁকি কমানো, গোঁড়ালি ফাটা থেকে রক্ষা পাওয়া, রক্ত সঞ্চালন বাড়ানোসহ নানা রোগ থেকে মুক্ত থাকতে পায়ের যত্ন নিতে হবে নিয়মিত।

নখের যত্ন

পায়ের যত্নে নখ পরিচ্ছন্ন রাখা জরুরী। পায়ের কিউটিকল মানে আঙ্গুলের যে অংশ থেকে নখের শুরু সেটি নখকে জীবাণুর সংক্রমন থেকে রক্ষা করে। তাই পেডিকিউর করার সময় কিউটিকলে যেন চাপ না পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। পেডিকিউর করার আগে অবশ্যই নখ পরিষ্কার করে নিতে হবে।

পায়ের পাতা পরিষ্কার

শরীরের পুরো ভার পায়ের উপর থাকে। আর পায়ের পাতার হাঁটার সময় ঘর্ষণ লাগে। এমনকি গরমে ঘেমে গিয়ে সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকে। ঘামে ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতির কারণে পায়ে দুর্গন্ধও সৃষ্টি হয়। তাই দুর্গন্ধ থেকে দূর রাখতেই হোক কিংবা সংক্রমণ থেকে বাঁচতে হলে অবশ্যই পা পরিষ্কার জরুরি। সাবান দিয়ে দিনে অন্তত একবার ধুতে হবে। এ ছাড়াও গোড়ালিতে লেগে থাকা ময়লা এবং মরা চামড়া ঝামাপাথরের ঘষায় তুলে নিতে হবে।

নেইল পলিশ ব্যবহারে সতর্কতা

নখে ঘনঘন নেইল পলিশ ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। আবার অনেক দিন ধরে নেইল পলিশ রাখাও ঠিক না। কারণ ১৫ দিনের মতো নেইল পলিশ রেখে দিলে নখে হলদেটে দাগ হয়ে যাওয়া থেকে শুরু করে নখ ভেঙে যাওয়ারও ঝুঁকি থাকে। যদি এই ধরনের সমস্যা দেখা দেয় তাহলে বুঝতে হবে যে ফাঙ্গাল ইনফেকশন হয়েছে। তাই দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার

গরম কিংবা শীত যে কোনো ঋতুই হোক না কেন পায়ের ত্বক শুষ্ক হলে ফেটে যাবে বা মরা চামড়া উঠতে থাকবে। তাই গরমকালেও পা কোমল ও মসৃণ রাখতে চাই ময়েশ্চারাইজারের ব্যবহার। যদি বেশি ফেটে যায় তাহলে পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করলে ভালো উপকার পাওয়া যায়।

ঘরে বসে পেডিকিউর

পেডিকিউর পায়ের যত্নের উত্তম সমাধান হতে পারে। কারণ একই সময়ে পায়ের বেশ কয়েকটি যত্ন একই সময়ে করে নেয়া যায়। সেজন্য পার্লারে না গেলেও ঘরে বসেই করা যাবে পেডিকিউর। ব্যস্ত পা দুটোকে সপ্তাহ অন্তর একদিন ঘন্টাখানেকের জন্য বিশ্রাম দেওয়াই যেতে পারে। প্রথমেই পায়ের নখগুলো সাইজ করে কেটে নিতে হবে। এবার পাত্রে মৃদু গরম পানি নিয়ে এক টেবিল চামচ লেবুর রস, আধা চামচ শ্যাম্পু, গোলাপজল দিয়ে মিশ্রণ তৈরি করে পনেরো মিনিট পা ডুবিয়ে রাখতে হবে। ভেজা অবস্থায় নেইল ব্রাশ দিয়ে নখগুলোকে ভালো করে ব্রাশ করতে হবে যাতে নখের ওপর থাকা বাড়তি মৃত কোষগুলো উঠে যায়। এরপর এক টেবিল চামচ লেুবুর রস ও এক চা চামচ চিনি দিয়ে স্ক্রাব তৈরি করে পায়ের গোড়ালি ভালো করে ম্যাসাজ করে নিতে হবে। ম্যাসাজ শেষে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে নরম কাপড়ে মুছে নিতে হবে। এবার এক টেবিল চামচ মুলতানি মাটি, এক টেবিল চামচ গোলাপজল ও এক চামচ অলিভ অয়েল দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে পায়ে লাগিয়ে নিতে হবে আর নখে লাগিয়ে নিতে হবে। শুকিয়ে গেলে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিতে হবে।

মেনে চলি

পর্যাপ্ত পানি শরীরকে আর্দ্র রাখে। ফলে পা ও নখকে ভালো রাখে। প্রতিদিন বাইরে থেকে ফিরেই পা পানি দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে। পা শুষ্ক হয়ে গেলে পেট্রোলিয়াম জেলি বা ক্রিম ব্যবহার করতে হবে। সঠিক জুতা ও মোজা নির্বাচন করতে হবে। সমস্যা হলে উঁচু জুতা পরিহার করা ভালো।

Leave a Reply

Your identity will not be published.