নীল ধ্রুবতারা (পর্ব ২৪ ও ২৫)

নীল ধ্রুবতারা (পর্ব ২৪ ও ২৫)

[এই পত্রোপন্যাসটি মূলত দুজন মানুষের গল্প। ফাহিম আর সিমির। একজন থাকে আমেরিকায়, অন্যজন বাংলাদেশে। একটা অনাকাঙ্খিত ই-মেইলের কারণে দুজনের পরিচয় হয়েছিল। ভুল থেকে পরিচয়, তারপর বন্ধুত্ব, তারপর বিচ্ছেদ। এর মাঝে ই-মেইলে দুজন অসংখ্য পত্র আদান-প্রদান করেছে। সেইসব পত্রে দুজনের দৃষ্টিভঙ্গি, পছন্দ-অপছন্দ, মনস্তত্ত্ব— সবই ফুটে উঠেছে। আজ পড়ুন ২৪ ও ২৫তম পর্ব।]

প্রথম পর্ব  দ্বিতীয় পর্ব  তৃতীয় পর্ব চতুর্থ পর্ব পঞ্চম পর্ব 
ষষ্ঠ পর্ব সপ্তম পর্ব অষ্টম পর্ব নবম পর্ব দশম পর্ব পর্ব ১১ পর্ব ১২ 
পর্ব ১৩ পর্ব ১৪ পর্ব ১৫ পর্ব ১৬ পর্ব ১৭ পর্ব ১৮ পর্ব ১৯ পর্ব ২০ পর্ব ২১ পর্ব ২২ ও ২৩

 

বেশ কিছুদিন পর, অবশেষে ফাহিম কিছুটা ফুরসুত পেল।

প্রথম সুযোগেই সে ল্যাপটপ খুলে বসে গেল। সিমির ইমেইলগুলোর অন্তত একটা উত্তর দেওয়া দরকার। সে লিখল—

প্রিয়তমা বর্ষা,
তোমার পাঠানো কয়েকটি ইমেইল পেলাম পরপর। তারমধ্যে একটি অসাধারণ ইমেইল রয়েছে। অসংখ্য ধন্যবাদ, মেইলটি পাঠানোর জন্য— যার জন্য আমি অপেক্ষায় থেকেছি দীর্ঘদিন। এক বসাতেই কয়েকবার পড়ে ফেললাম এবং তখনই মনে হলো তোমাকে কিছু লিখি। আমি জানি, তুমিও আমার উত্তরের অপেক্ষাতেই থাকো, আছো। ঘুম থেকে উঠেই যেন তোমার ইনবক্সে এটি পৌঁছে যায়— তাই লিখতে বসে গেলাম এখনই।

একটি ব্যাপারে তোমার সঙ্গে আমিও একমত—আমাদের দেখা হওয়ার পর থেকেই আমরা দুজনেই অনেকটা বদলে গিয়েছি। তোমার মতো আমিও বুঝতে পারছি ঠিক। আমি জানি, তোমার জীবনে আমি যেভাবে জড়িয়ে গেছি, এটি ঠিক হওয়ার কথা নয়, কাম্যও নয়। আমার কোনো অধিকারও নেই। প্রাপ্যও নয়। এসবে আমার লোভও নেই, শুধু আমি তোমার সারাজীবনের বন্ধু হয়েই থাকতে চাই— এ কথা সত্যি।

তুমি আর আমি অবিশ্বাস্য এক সম্পর্কের ভ্রমণে একই নৌকায় ভেসে চলেছি। যা কিছু ঘটেছে, উচিৎ ছিল না, তবুও ঘটেছে। যা ঘটেছে তার জন্য কোনো অনুশোচনা করতে চাই না আবার মেনে নিতেও কষ্ট হচ্ছে। উভয়সংকট বোধহয় একেই বলে।

তোমাকে কিছু বিষয় পরিষ্কার করতে চাই— তোমাকে কারও সংসার ভাঙার কারণ হতে হবে না। যদি কোনোদিন কোনো কারণে আমার স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক ভেঙেও যায়, আমি কখনোই তোমার কাছে গিয়ে বলব না, আমাকে বিয়ে করো। কারণ আমি জানি, আমি তোমার কাপ অব টি নই। আমি তোমার পাশে বরং ছায়া হয়েই থাকতে চাই। তোমার দুর্বল সময়ে শক্তি জোগাতে চাই। স্বস্তি দিতে চাই। আমি এমন একজন হয়ে থাকতে চাই, যাকে বিশ্বাস করা যায়, যার সঙ্গে ভালোলাগার আনন্দ এবং মন্দলাগার কষ্ট ভাগ করে নেয়া যায়।

বর্ষা, তোমাকে দেখার পর থেকে, আমিও কেমন উন্মত্ত হয়ে থাকি তোমার জন্য। অথচ, আমি জানি আমার সীমাবদ্ধতার কথা। তোমারও। যতই কৃপণ থাকতে চাই, দূরে সরিয়ে রাখতে চাই নিজেকে, ততই ক্ষুধার্ত হয়ে যাই, একটু ভালোবাসার জন্য। কিছু বিশেষ মুহূর্তের জন্য। যার জন্য অপেক্ষা করে আছি আমি দীর্ঘ সময়। মাঝে মাঝে বড়ো বেশি লোভী হয়ে যাই। কী করব বলো, মানুষ তো! আমি তো কোনো রোবট নই। সন্ন্যাসীও নই।

তোমার প্রতি কৃতজ্ঞতার শেষ নেই আমার। তোমার চিঠিটি আমার হৃদয় ছুঁয়েছে, অনুভবে। 

বর্ষা, আমার কারণে তোমার অনেক কষ্ট হলো। ঝামেলাও। এমনিতেই যথেষ্ঠ পেইন অ্যান্ড সাফারিংয়ের মধ্যে দিয়ে তোমাকে যেতে হয়, তার ওপরে যুক্ত হয়েছি আমি। আমার কারণেই তোমাকে এখন নতুন করে অনুশোচনায় ভুগতে হচ্ছে। আমি ঠিক জানি না এখন তোমাকে কী বলা উচিত। আমি বুঝতে পারি না এখন আমি কী করলে এই গিল্ট ফিলিংটা তোমার মাথা থেকে বের করে দেয়া যাবে। আমি সত্যিই জানি না।

তুমি আল্লাহর দোহাই দিয়ে বলেছ, আমার অনুভূতির কথা জানাতে— কোনো রকম সেন্সর না করেই আমার অনুভূতি জানালাম। তুমি কীভাবে নেবে জানি না। তোমার ভালো লাগবে না জানি, কিছু বিষয় কোনো রকম আলোচনায় না আসাই ভালো। জীবনে অনেক কিছুই ঘটে যায়, কিন্তু সেই এমন কিছু আমরা বিশ্বাস করতে চাই না। বেমালুম ভুলে যেতে চাই। কখনো ভুল করেও মনে করতে চাই না। কিন্তু চাইলেই কি সবকিছু ভুলে থাকা যায়? নিজের সঙ্গে হিপোক্রেসি করতে ইচ্ছে হলো না। আমায় ক্ষমা কোরো।

তোমাকে সেভাবে কখনো বলা হয় নি— অসাধারণ একটা মেয়ে তুমি, বর্ষা। তুমি সৎ, অমায়িক, ভদ্র এবং অত্যন্ত দুর্লভ প্রজাতির একটা মেয়ে। আমি তোমার অনুভূতিকে অভিবাদন জানাই। শুধু এটুকুই বলব, দয়া করে আমাকে ভুল বুঝো না। তোমাকে কোনোভাবেই বিব্রত কিংবা আঘাত করার বিন্দুমাত্র ইচ্ছে আমার নেই। ছিল না কোনোদিনও। তারপরও, আমার ব্যবহারে যদি নেতিবাচক কিছু খুঁজে পাও— নিজ গুণে ক্ষমা করে দিয়ো।

তুমি আমাকে নিয়ে এত এত প্রশংসার বাণী দিলে— আমাকে নিয়ে তোমার মূল্যায়ন, আমি কি সত্যিই তার যোগ্য? সে দাবি কি আমি করতে পারি? আবারও কৃতজ্ঞতা।

সন্ধ্যা হয়ে গেছে। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি পড়ছে। পাতাবিহীন গাছপালাগুলো এলোমেলো হচ্ছে ভিজে হাওয়াতে। শিকাগো— দ্য উইন্ডি সিটি অব আমেরিকা। শীতের সময়ে এই শহরে বিকেল চারটা বাজতেই দিনের আলো ফুরিয়ে যায়। আজকের মতো বিদায় নিতে চাই। বাসায় যেতে হবে। বাকিরা সবাই কখন চলে গেছে!

খুব শিগগিরই কথা হবে। অফুরান ভালোবাসা।

—তোমার ফাহিম।

পর্ব-২৫

ঢাকায় বসে বিভিন্ন আলাপ প্রসঙ্গে ফাহিম জানতে চাইছিল সিমির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা।

সিমিকে দেখেছে সে বিষণ্নতায় ভুগতে। ফাহিম তাকে বিভিন্ন কথায় মোটিভেট করার চেষ্টাও কম করে নি। সে বলেছে, ‘তোমার নিজের জীবনটা নিজেরই। ভাবাবেগের বশে সেই জীবনকে নষ্ট কোরো না। জীবন আদৌ ভাবাবেগের জায়গা নয়।’

সিমি অবাক হয়ে তাকাল।

ফাহিম অভিজ্ঞ মোটিভেশনাল স্পিকারদের মতো বলে গেল, ‘নিজেকে ভালোবাসো। ভালোবাসো নিজের জীবনকে, নিজের পারিপার্শ্বিকতাকে। তুমি আছ, তাই পৃথিবী আছে। তোমাকে ঘিরেই তোমার পৃথিবী চারদিকে আবর্তিত হচ্ছে। তুমি যেদিন থাকবে না, তোমার কথাও কেউ মনে রাখবে না। আমিও না। এটাই নিয়ম। পৃথিবী চলে নিজের মনে। যার যার পৃথিবী ঘুরে তাকেই কেন্দ্র করে। এটাই ফ্যাক্ট! পৃথিবীর সময় নেই, পেছনে তাকিয়ে, পা ছড়িয়ে বসে চোখের পানি ফেলবে।’

ফাহিমের কথার ধরনে সিমি হেসে দিয়ে বলল, ‘তা আমাকে কী করতে বলো তুমি? আমি যেভাবে আছি, ভালোই তো আছি। চলে তো যাচ্ছে। তবুও তোমার পরামর্শ আমি শুনতে চাই। বলো।’

‘তোমার উচিত হবে কানাডা কিংবা আমেরিকায় গিয়ে সেটেল করা।’ বলল ফাহিম।

‘তাই? এত সহজ?’

‘চেষ্টা করতে তো দোষ নেই। তোমার শিক্ষাগত যোগ্যতা আর কাজের অভিজ্ঞতা স্কিল্ড ওয়ার্কার হিসেবে  কানাডায় মাইগ্রেট করার জন্য যথেষ্ট সহায়ক হবে।’

‘আর আমেরিকায় যেতে চাইলে?’

‘ভিজিট ভিসা কিংবা হায়ার এডুকেশনের জন্য ট্রাই করতে পারো।’

‘কিন্তু সে তো অনেক টাকার ব্যাপার। আমি অত টাকা কোথায় পাব? থাক বাদ দাও।’

ফাহিম হতাশার দৃষ্টিতে তাকাল। বলল, ‘আহা, চেষ্টা করতে সমস্যা কোথায়?’

সিমিও চুপ করে রইল।

ফাহিম আর কিছু বলল না।

কিছুক্ষণ ভেবে সিমি বলল, ‘ইউ আর রাইট। আচ্ছা দেখি। চেষ্টা করে দেখতে তো দোষের কিছু নেই। ভিসা না হলে হবে না— হোয়াট ডু আই লুজ?’

সেদিন রাতেই ফাহিম সিমিকে কানাডায় ইমিগ্রেশন সংক্রান্ত কিছু ওয়েবসাইটের লিঙ্ক আর আমেরিকার কয়েকটি ইউনিভার্সিটির লিঙ্ক পাঠিয়ে দিল। সে লিখল—

বর্ষা, কানাডায় মাইগ্রেট করার ওয়েবসাইট লিঙ্কটি পাঠালাম। একটা ফরম ডাউনলোড করে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে সাবমিট করতে হবে। নিয়মাবলীটি দেখে নিয়ো। ইন্ডিয়া থেকে ফিরে এসেই কাজটি করো।

ভালো থেকো। ফাহিম।

অফিসে বসেই ফাহিমের মেইল খুলল সিমি এবং তখনই উত্তর লিখল। ফাহিমের নামের সঙ্গে একটা ‘জ’ লাগিয়ে লিখল ফাহিমজ। কেন লিখল কে জানে!

ফাহিমজ,
লিংকটির জন্য ধন্যবাদ।

তোমার জন্য এখনই একটি ইমেইল লিখছিলাম। তবে এখন যা লিখছি তা কিন্তু তোমার মেইলের উত্তর নয়। আমার মনে হয় না এখন সেটা লেখা সম্ভব। আমার সময়ও নেই। তবে কথা দিচ্ছি, খুব শীঘ্রই লিখব। অপেক্ষায় রাখলাম, কিছু মনে কোরো না।

এখন বলো, কেমন আছ? কাজ কেমন যাচ্ছে? আবহাওয়া কেমন? ঢাকায় প্রচণ্ড শীত পড়েছে। হিম শীতল ঠান্ডা, রীতিমতো হাড় কাঁপানো। মনে হচ্ছে সাইবেরিয়ার শীত এসে জেঁকে বসেছে। শিকাগোর শীতের গল্প শুনেছি, এমনই কি? প্রতিদিনই নিশ্চয়ই তুষার পরিষ্কার করতে করতে হাঁপিয়ে যাচ্ছ?

আমি এখন অফিসে, তাই এর বেশি আর কিছু লিখছি না। দেখি বাসায় গিয়ে আজ রাতেই তোমার জন্য একটা মেইল লিখতে পারি কি-না। তবে আমার মেইলের অপেক্ষায় থেকো না প্লিজ। তুমিই তো বলেছিলে, অপেক্ষা ভীষণ খারাপ জিনিস। আমার মোবাইল সেটটি সাথে করে নিয়ে যাচ্ছি ইন্ডিয়া। সেখানে পৌঁছেই তোমাকে লোকাল নাম্বার পাঠিয়ে দেব। তুমি চাইলেই আমাকে কল করতে পারবে। চাইলে ক্রিসের সঙ্গেও কথা বলতে পারবে। 

আমি বরং এখন যাই। আমার আরেক কলিগ বসে আছে এই কম্পিউটার থেকে কাজ করবে বলে। কাজেই জায়গা ছেড়ে দিতে হচ্ছে।

তাহলে অপেক্ষাতেই থাকো, আমি আরেকটি মেইল লেখা পর্যন্ত। আমার এপাশ থেকে বিদায়। আগামীকালটি অসাধারণ কাটুক তোমার।

অনেক ভালোবাসা। তোমার বর্ষা।

রাতে সিমির ইমেইলটি পেয়েই ফাহিম উত্তর দিল।

খুব দ্রুত তোমার মেইল পেয়ে অসম্ভব ভালো লাগছে। আমার অন্য মেইলের উত্তর দেয়ার জন্য অত ব্যস্ত হতে হবে না। সময় করে লিখলেই হবে। আমার তাড়া নেই।

এখানেও অনেক শীত পড়েছে। শহরটা যখন শিকাগো, শীতের মাত্রাটা নিশ্চয়ই বুঝতেই পারছ। হিমাংকের নিচেই থাকছে তাপমাত্রা। আর শিকাগোতে বাস করে এর চেয়ে ভালো কিছু আশা করাই তো অনুচিত। আগামী সপ্তাহে শীতের প্রকোপ আরও বাড়বে। শুনেছি আলাস্কা থেকে ধাবিত হয়ে একটি শৈতপ্রবাহ কানাডা হয়ে আমেরিকার কিছু অঞ্চলের ওপর দিয়ে যাবে অচিরেই। তার মধ্যে মিশিগান, ইন্ডিয়ানা, নিউইয়র্ক এবং শিকাগো রয়েছে।

না, তুষার পরিষ্কার করার কাজে ব্যস্ত না হলেও অন্দরমহলের পরিচর্যা আর কিছু রান্নার কাজেও সময়টা যাচ্ছে বেশ।

ইন্ডিয়া ট্রিপের প্রস্তুতি কেমন চলছে তোমার? তোমার ইচ্ছে পূরণ হোক। মনে প্রাণে চাই তোমার ভ্রমণ আনন্দ ও স্মৃতিময় হোক।

তোমার মুখেই এই ভ্রমণের গল্প শোনার জন্য অধীর আগ্রহ নিয়ে আমি অপেক্ষা করে থাকব। ভুলে যেয়ো না, আমাদের মধ্যে কিন্তু সন্ধি হয়েছে, যা কিছু ঘটবে তার সবকিছুই শেয়ার করবে। আমার দোয়া আর শুভকামনা থাকবে তোমার সাথে ছায়া হয়ে।

আর সতর্কতা অবলম্বন কোরো। ভুলেও যেন ভুল করে না বসো— সেটা মনে রেখো।

মুহূর্তগুলো উপভোগ কোরো। একটি স্মৃতিময় ভ্রমণকাহিনি তৈরি হোক। 

—তোমারই ফাহিম।

ইন্ডিয়ায় এক সপ্তাহ ভীষণ ব্যস্ততায় কেটে গেল সিমির।

ইন্ডিয়া গিয়ে ফাহিমকে মেসেজ পাঠিয়েছিল সিমি। ফাহিমও শুভকামনা জানিয়েছে। এর বেশি আর কোনো কথা হলো না ওদের।

ইন্ডিয়া ট্রিপে ক্রিস নামে এক অ্যাংলো ইন্ডিয়ান সিমির সার্বক্ষণিক গাইড হয়ে তাকে নিয়ে ঘুরে বেড়াল সবখানে, যেখানেই সে যেতে চেয়েছে। চেন্নাইয়ের ভেলর হসপিটালে রাশেদের চিকিৎসাকালীন সময়ে ক্রিস সার্বক্ষণিক দেখভাল করেছে সিমির। বিপদের দিনগুলিতে পাশে থেকেছে। প্রয়োজনে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে। ক্রিসের সঙ্গে সিমির পরিচয়টাও ছিল ভীষণ অন্যরকম। পরিচয়ের পর থেকে অনেকটা একতরফাভাবেই সিমির একজন শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে লেগে থেকেছে। বাইরে থেকে কিছু বুঝতে পারা না গেলেও, মনের অজান্তেই ভেতরে ভেতরে সে যে অনেকটা দূর এগিয়ে গেছে, সেটা আর কেউ না বুঝলেও সিমি ঠিকই বুঝতে পারে। পাছে ক্রিস কষ্ট পায়, তাই তার আবেগের কথা ভেবেই সিমি কিছু বলল না।

ফাহিমের ফিরে যাওয়ার পরপরই সিমি ইন্ডিয়া যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। নিজের ভেতরকার অস্থিরতাকে দূর করার জন্যই এই পথটাই ভালো মনে হয়েছিল তার। ক্রিসের সঙ্গে যোগাযোগ করেই সিমি ইন্ডিয়া ট্রিপ কনফার্ম করে। কিন্তু ইন্ডিয়া গিয়েও তার অস্থিরতা বাড়ল বই কমল না। ক্রিস যথাসাধ্য চেষ্টা করল সিমিকে সময় দেয়ার। বঞ্চিত করল না তার কোনো ইচ্ছে থেকেও। তারপরেও কিসের এক অভাববোধ ওকে তাড়িয়ে বেড়াল। সে দিন গুনতে থাকল ঢাকা ফিরে যাওয়ার।

ফাহিম অপেক্ষায় থাকল সিমির ইন্ডিয়া ট্রিপের গল্প শোনার।

(চলবে…)

 

Leave a Reply

Your identity will not be published.